অধক্ষর প্রচেষ্টায় পাল্টে গেছে মাদ্রাসার দৃশ্যপট
আপনার ফয়সাল
চারপাশে বহুতল ভবন, মাঝে সবুজ মাঠ আর ফুলগাছে বেষ্টিত নজর কাড়া পরিবেশ। একটু সময় কাটানোর জন্য বিকেল হলেই জমে শিক্ষার্থী আর ধর্মীয় মানুষের ঢল। এ যেন এক দর্শনীয় স্থান। অথচ কয়েক বছর আগেও প্রতিষ্ঠানটির ছিলো বেহাল দশা।
অধ্যক্ষ সাইফুল্লা মনিরের প্রচেষ্টায় পাল্টে গেছে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী হামীদিয়া কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদ্রাসার দৃশ্যপট।
১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সোনাইমুড়ী হামিদীয়া কামিল মাদ্রাসা। অনেক পুরাতন ও মানসম্মত শিক্ষার কারণে দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা এখানে পড়ালেখা করতে আসে। প্রতিষ্ঠানটির অনেক সুনাম থাকলেও পরিবেশের দিক দিয়ে ছিলো একটু পিছিয়ে। প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ভবনই ছিলো জরাজীর্ণ। সেখানে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতো শত শত শিক্ষার্থী।
২০০৯ সালে দায়িত্বরত অবস্থায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. আহমদ উল্যাহ মৃত্যুবরণ করলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন উপাধ্যক্ষ সাইফুল্লা মনির। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানে উন্নত শিক্ষাদানের পাশাপাশি উন্নয়নের দিক দিয়ে পরিবর্তনের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা করেন। নোয়াখালী শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে মাদ্রাসার ভবনগুলো ব্যবহারের অযোগ্য ঘোষণা করা হলে ২০১৩ সালে অধ্যক্ষ নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করেন তিনি। সে অনুযায়ী পূর্বের জরাজীর্ণ ভবনগুলো ভেঙে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ৮০ শতাংশ আয় ও মানুষের থেকে গৃহীত অনুদান মিলিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তর পাশের (১৫০ ফিট দৈর্ঘ্য) ভবন ভেঙ্গে দোতলা বিশিষ্ট মরহুম অধ্যক্ষ মাও. তোফায়েল আহমাদ ভবন ও পূর্বপাশের দোতলা (১১০ ফিট দৈর্ঘ্য) ভবন ভেঙে তিনতলা বিশিষ্ট হাদীস ভবন নির্মাণ। এছাড়াও দক্ষিণপাশে অবস্থিত একতলা ভবনকে তিনতলা করে তাফসির ভবন নামকরণ করেন।
পরে প্রতিটি ভবনের সামনে বিভিন্ন ধরনের ফুলগাছ রোপণ, জাতীয় পতাকার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন পতাকা ইস্টার্ণ নির্মাণ করে তৈরি করেছেন নজর কাড়া পরিবেশ।
ছাত্রীদের কমন রুম, নামাজ পড়ার স্থান এবং টিফিনের জন্য যাতে কষ্ট না করতে হয় সে জন্য মাদ্রাসা আঙ্গিনায় করা হয়েছে ক্যান্টিনের ব্যবস্থা।
অধ্যক্ষের প্রশংসা করে শিক্ষার্থীরা জানায়, স্যারের কঠোর পরিশ্রমের কারণে মাদ্রাসার উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মাদ্রাসা আঙ্গিনায় কেউ যাতে ময়লা না ফেলে সে জন্য তিনি প্রতিটি ক্লাসে নোটিশ করেন। শিক্ষকদের সহযোগিতা থাকায় তিনি প্রতিটা কাজের দ্রুত বাস্তবায়ন করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, শিক্ষা এবং পরিবেশের দিক দিয়ে উন্নত হওয়ায় হামিদিয়া কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। অধ্যক্ষ সাইফুল্লা মনির অত্যন্ত ভালো একজন মানুষ। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে মাদ্রাসার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ সাইফুল্লা মনির বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে উন্নত পরিবেশে থেকে সুস্থভাবে পড়ালেখা করতে পারে এবং ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হয় সে চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।